Bhadoro Ashino Mashe Chata Dharo He / Offbeat Purulia / Part 5
M4A•Maison d'episode
Manage episode 375383785 series 3411765
Contenu fourni par Srijan Kundu. Tout le contenu du podcast, y compris les épisodes, les graphiques et les descriptions de podcast, est téléchargé et fourni directement par Srijan Kundu ou son partenaire de plateforme de podcast. Si vous pensez que quelqu'un utilise votre œuvre protégée sans votre autorisation, vous pouvez suivre le processus décrit ici https://fr.player.fm/legal.
ভাদ্রমাস পড়ে গেছে । এই মাস যেমন তালের বড়ার মাস, তেমনিই এই মাস রাঢ় বাংলায় ভাদু পুজোর মাস। ভাদ্র সংক্রান্তির দিন ভাদুর বিসর্জন আর বিশ্বকর্মা পুজো - এগুলো একটু আধটু আমি জানতাম। পুরুলিয়ায় চাকরির সময় আমি আর একটা উৎসব, আর একটা পরবের কথা জেনেছি, যেটার কথা ওখানে না থাকলে হয়ত জানাই হত না। উৎসবের নাম ছাতা পরব। নমস্কার, আমি সৃজন। আমার পডকাস্ট সৃজনের পডাবলীর স্পেশাল সেগমেন্ট অফবিট পুরুলিয়ায় আজ আপনার সাথে গল্প করব ছাতা পরব নিয়ে। এমন একটা উৎসব যেটা কেবল বছরের একদিনই হয়, খুব কম জায়গায় হয়। তার মধ্যে যেটা সব থেকে ফেমাস - চাকলতোর, তার কথাই বলব। স্থানীয় রাজার মাথায় যে ছাতাটি এখানে তোলা হয় সেটির উচ্চতা ২৫ থেকে ৩০ ফুট। রাজা বলতে রাজপরিবারের বংশধর। শালের খুঁটির উপরে বেঁধে সাদা রঙের কাপড় দিয়ে তৈরি হয় ছাতা। আগে পালকিতে চড়ে রাজা রাজপ্রাসাদ থেকে মেলায় আসতেন ছাতা তুলতে। এখন আর পালকির ব্যবহার হয় না যুগের সাথে তাল মিলিয়ে রাজা আসেন মারুতি বা টাটা সুমোতে চেপে। আগে ছাতা হতো অনেক বড় মাপের। কাপড় লাগত ১৪ গজের মতো। এখন সাইজ অনেক কমেছে তাই কাপড় কম লাগে। ছাতা মেশিনে সেলাই করা হয়। আগে প্রত্যেক বছর নতুন শালের খুঁটি ব্যবহার করা হতো, তা আর এখন হয়ে ওঠে না। এমনিতে কাঠের দাম আকাশছোঁয়া তারপরে শালকাঠ তো আরও রেয়ার। এখন তাই পুরনো কাঠকেই যত্ন করে রাখা হয় পরের বছরের জন্য। এই পরবের শুরু কোথায় সেটা জানতে গিয়ে ইন্টারনেটে বেশ কিছু ইনফরমেশন পাচ্ছি, যেগুলো একটা অন্যের সাথে যায় না। আনন্দবাজারের একটা রিপোর্টিংয়ে আমি পঞ্চকোট রাজবংশের বর্তমান উত্তরসূরি সোমেশ্বর লাল সিংহ দেও এর একটা বক্তব্য পাচ্ছি, আমার সেটা সব থেকে বেশি রিলায়েবল ও লজিক্যাল বলে মনে হয়েছে। আনন্দবাজারের লেখাটা থেকে একটু পড়ে শোনাই - উৎসবের সূচনার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে পঞ্চকোট রাজবংশের নাম। ওই রাজবংশের অন্যতম উত্তরপুরুষ সোমেশ্বর লাল সিংহ দেও জানালেন, একদা পঞ্চকোট রাজবংশের এক রাজা যুদ্ধে গিয়েছিলেন। কিন্তু, বেশ কিছুদিন কেটে যাওয়ার পরেও রাজার কোনও খবর পাওয়া যাচ্ছিল না। রাজা যুদ্ধে জয়ী হয়েছেন, না পরাজিত, সে সম্পর্কে প্রজা বা পরিবারের সদস্যেরা ছিলেন অন্ধকারে। তখন দূত মারফত খবর আসত। যেখানে দূতের দেখা মিলছিল, সেখানে খোঁজ নিয়েও রাজার কোনও খবর পাওয়া যায়নি। সোমেশ্বরবাবুর কথায়, “এই অবস্থায় রাজবাড়ির সকলের সঙ্গে প্রজারাও পড়লেন চিন্তায়। তাহলে কি কোনও দুঃসংবাদ মিলতে চলেছে? দুশ্চিন্তা আর উদ্বেগে যখন রাতে ঘুম নেই সকলের, সে সময় হঠাৎই একদিন খবর এল, রাজা যুদ্ধে বিজয়ী হয়ে ফিরে আসছেন।” জনশ্রুতি, এর পরেই ঠিক হল রাজা যে যুদ্ধে বিজয়ী হয়েছেন, সেই খবর প্রজাদের জানাতে হবে। কিন্তু কী ভাবে প্রজাদের কাছে দ্রুত বিজয় সংবাদ পৌঁছে দেওয়া যাবে? তখন জয়ের প্রতীক হিসাবে ছাতা তুলে বিজয় বার্তা ঘোষণা করে দেওয়া হল। ভাদ্র সংক্রান্তির এই দিনটিতে সেই বিজয় বার্তা ঘোষণা করা হয়েছিল। সেই থেকে আজও মানভূমে এই বিজয় দিবস ‘ছাতা পরব’ হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। সোমেশ্বরবাবু বলেন, “পঞ্চকোটের রাজারা খুবই প্রজাবৎসল ছিলেন। তাই যখন রাজার বিজয় উৎসবের খবর রাজ্যে পৌঁছল, তখন সকলে মিলে আনন্দে মেতে উঠেছিলেন। আর এই ছাতা সাদা রঙের। আমাদের কুলদেবতা শ্যামরঘুবর। তাঁর ছাতার রংও সাদা। সেই ছাতা তুলেই বিজয়ের খবর পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল।” এই ছিল আনন্দবাজারের লেখা। আর একটা খুব ইম্পরট্যান্ট রেফারেন্স তরুণদেব ভট্টাচার্যর লেখা পুরুলিয়া - সেখানে ছাতা পরব নিয়ে কি বলা আছে পড়ে শোনাই - বই থেকে এই টুকুই। ইন্টারনেটে কয়েকটা জায়গায় ছাতা পরবের সাথে ইন্দ্রদেবতার পুজো রিলেট করা হয়েছে। সেটা আমার খুব একটা বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে হয়নি। ইঁদ পরব বলে আর একটা উৎসব হয় এই সময়, আমার মনে হয়েছে সেটার সাথে নামের মিল থাকায় ইন্দ্রদেবতার কথা চলে এসেছে। ইঁদ পরব নিয়ে অন্য একদিন না হয় বলা যাবে। এই চাকলতোর যেতে হলে ট্রেনে টামনা স্টেশনে নামতে হবে, পুরুলিয়া থেকে বরাভূম বা চক্রধরপুরের দিকে যে লাইন যাচ্ছে, সেই লাইনে পুরুলিয়ার পরের স্টেশন টামনা, বাসে গেলে পুরুলিয়া থেকে বড়বাজার, অযোধ্যা পাহাড় বা জামশেদপুর যে বাস যাচ্ছে, তাতে করে টামনা মোড় নেমে সেখান থেকে অন্য কোন বাস বা টোটো করে যেতে হবে। ঘটনাচক্রে আমি গতবছর একটা কাজে ওই দিকে গেছিলাম, তাই আমার দেখার ও জানার সৌভাগ্য হয়েছিল - কি বিশাল আয়োজন হয় ওই মেলায়। তবে আমার রাজাকে বা রাজার মাথায় ছাতা তোলা দেখা হয়নি। সেটা আমি যখন ওখান দিয়ে যাচ্ছি, তার অনেক আগেই হয়ে গেছে। তবে মেলায় বিশাল বিশাল ধামসা মাদল বিক্রি হতে দেখেছি। ছোট ছোট খেলার, যেগুলো রিং ছুড়ে টার্গেটে লাগানো বা লটারি টাইপের ব্যাপার, সেরকম খেলা হতে দেখেছি। এগুলো প্রাইজ হাঁসের ডিম, বা এরকম খুব সিম্পল জিনিসপত্র। দেশি মদ বিক্রি হতে দেখেছি, বিভিন্ন ধরনের খাবার দাবারের স্টল দেখেছি।
…
continue reading
79 episodes